শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম

রংপুর প্রতিনিধিঃ
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’-এর অন্যতম অগ্রসেনানী ও শহীদ ছাত্রনেতা আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং সদ্য কারামুক্ত মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম।
৪ জুলাই (শুক্রবার) সকালে তিনি রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি তাদের খোঁজখবর নেন এবং শহীদ আবু সাঈদের শাহাদাত কবুল এবং তাঁর পরিবারের জন্য ধৈর্য ও সাহস প্রদানের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
জিয়ারতের সময় তাঁর সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম, রংপুর জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
কবর জিয়ারতের পর আবেগঘন পরিবেশে জনাব আজহারুল ইসলাম শহীদ আবু সাঈদের পিতা ও দুই ভাইকে বুকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা প্রদান করেন।
“আবু সাঈদ একটি স্ফুলিঙ্গ, সে ভীতু জাতিকে সাহস শিখিয়ে গেছে”—আজহার
কবর জিয়ারত শেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন,“জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা, শিশু, যুবক ও বৃদ্ধরা তৎকালীন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। শহীদ আবু সাঈদ যদি আত্মত্যাগ না করতেন, তাহলে আমি কিংবা আমার মতো বহু বিনা অপরাধে কারারুদ্ধ রাজবন্দি আজ মুক্ত থাকতে পারতাম কিনা, একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই জানেন।”
তিনি বলেন, “শত শত আলেম, ইসলামী ব্যক্তিত্ব—যারা মানুষের মাঝে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন—তাদের ওপর জুলুম হয়েছে, মামলা দেওয়া হয়েছে, অথচ তাদের কোনো অপরাধ ছিল না। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার শুধু গণতন্ত্র নয়, ইসলামের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছিল। শহীদ আবু সাঈদ সেই অন্যায় শাসনের বিরুদ্ধে জীবন দিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছেন।”
আত্মসমালোচনার সুরে তিনি বলেন,“আমরা বিগত সাড়ে ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করেছি, কিন্তু আবু সাঈদের মতো বুক চিতিয়ে সাহস দেখাতে পারিনি। সে যেন একটি স্ফুলিঙ্গ, যে বাংলাদেশকে দেখিয়ে দিয়েছে—ভীতু হয়ে বাঁচা যায় না। জীবন দিয়ে হলেও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়।”
শহীদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান
বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে আমি দেশবাসীকে বলতে চাই—আসুন, আমরা যেন তার রক্তের সঙ্গে বেইমানি না করি। তার আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়। দল-মত নির্বিশেষে সকলকে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু ফটোসেশনের মাধ্যমে দায় সারা যাবে না। শহীদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব।” শেষে তিনি শহীদ আবু সাঈদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং দেশবাসীর প্রতি জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান।