নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

বাড়ছে গুরুতর অপরাধ

Aug 28, 2024 - 23:48
নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেওয়ার পর তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় কেটে গেছে। এখনো থানার পুলিশের কর্মকাণ্ড পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মামলা হচ্ছে। পুলিশের বেশির ভাগ তৎপরতা এখনো সেগুলো নিয়েই।

এদিকে দেশে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, হত্যা, হামলা, লুটপাট, রাহাজানির মতো গুরুতর অপরাধ কর্মকাণ্ড দ্রুত বেড়ে চলেছে। বাড়ছে মাদক কারবারসহ অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ড। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, গত কয়েক দিনে কেবল রাজধানীতেই খুন হয়েছে ১১ জন। সারা দেশেই ঘটছে খুনের ঘটনা।

জঙ্গল, জলাভূমিসহ নানা জায়গা থেকে অনেক মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে।

সরকার উত্খাত আন্দোলনের সময় পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সারা দেশে চার শতাধিক থানায় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি অনেক পুলিশ সদস্যও হতাহত হয়েছেন।

এ সময় সুযোগ বুঝে কিছু দুষ্কৃতকারী পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করেছে। সেসব অস্ত্র ও গোলাবারুদের একটি বড় অংশই এখনো উদ্ধার করা যায়নি। রবিবার পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের মধ্যে এক হাজার ৮১৪টি অস্ত্র, ৮৭ হাজার ৪০ রাউন্ড গুলি, দুই হাজার ৬৪৭টি টিয়ার শেল এবং ২৯২টি সাউন্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। লুট হওয়া অস্ত্র, গোলাবারুদ ফেরত দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ও অতিক্রান্ত হয়েছে।

সেসব অস্ত্রের অপপ্রয়োগ হয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই জননিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেন এমন অনেকেই মনে করছেন, লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে অবিলম্বে দেশব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু করা প্রয়োজন।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ৫০টি থানার মধ্যে ২২টি পুড়ে গিয়েছিল। অনেক পুলিশ সদস্য হতাহত হন। এতে এখনো অনেকটা আতঙ্কে রয়েছে পুলিশ বাহিনী। তাই পুরোপুরি কাজে ফিরে আসতে পুলিশের আরো কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ কী করবে? মানুষের নিরাপত্তার অভাববোধ ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠছে। এখনো অনেক স্থানে মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না। দলবদ্ধ হয়ে গ্রাম বা মহল্লা পাহারা দিতে হয়। এভাবে কত দিন চলবে?

এক বেলা না খেয়ে হলেও মানুষ নিরাপদে মানসম্মান নিয়ে বসবাস করতে চায়। মানুষের সেই মৌলিক চাহিদার জায়গাটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানুষ খুব অসহায় হয়ে পড়ে। যেকোনো মূল্যে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রকাশ সুত্রঃ কালের কণ্ঠ, ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪