দিনাজপুরে বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষে সাফল্য

ডেস্ক রিপোর্টঃ দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় প্রথমবারের মতো বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষ করে সফল হয়েছেন কয়েকজন কৃষক। আধুনিক মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কম খরচে চাষ করা এই সবজির ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ মনে করছে, স্কোয়াশ চাষ কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, চলতি মৌসুমে খানসামার সাতটি স্থানে স্কোয়াশ চাষ হয়েছে। প্রতিটি জমিতে প্রায় ২০ শতক জায়গায় এই সবজি চাষ করা হয়েছে। ‘টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায় কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, জৈব বালাইনাশক এবং অন্যান্য কৃষি সহায়তা দেওয়া হয়েছে, যা ফলন বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া দোলাপাড়া, আংগারপাড়া এবং জাহাঙ্গীরপুর এলাকায় গেলে চোখে পড়ে, প্রতিটি ক্ষেতের গাছে ঝুলছে ছোট-বড় স্কোয়াশ। কিছু সবজি ইতোমধ্যে পরিপক্ব হয়ে গেছে, আর কিছু পরিণতির পথে রয়েছে।
আংগারপাড়া এলাকার কৃষক তাইজুল ইসলাম বলেন, "সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে স্কোয়াশের বীজ বপন করতে হয়। ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে গাছে ফুল আসে, আর পরাগায়নের ১০-১৫ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়।" তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাজারে অন্যান্য সবজির দাম কম থাকলেও স্কোয়াশ ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা কৃষকদের জন্য লাভজনক।
খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার জানান, "এ উপজেলায় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সাতজন কৃষক স্কোয়াশ চাষ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা আরও উৎসাহিত হচ্ছেন। আগ্রহী কৃষকদের আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করবো।"
উল্লেখ্য, স্কোয়াশ মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে—সবুজ ও হলুদ রঙের। দেখতে এটি শসার মতো হলেও গাছটি মিষ্টি কুমড়ার গাছের মতো। দেশে বেশ কিছু জায়গায় স্কোয়াশ চাষ হলেও খানসামায় এটি নতুন। গত মৌসুমের পর এবারও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা আগামীতে এর চাষ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন।
দিনাজপুরের কৃষকরা স্কোয়াশ চাষে যে সাফল্য পেয়েছেন, তা ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। কৃষকরা সঠিক পরামর্শ ও সহায়তা পেলে স্কোয়াশ চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে এবং এটি লাভজনক কৃষি ফসল হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।