চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ ছাত্রীসহ ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন ছাত্রী ও একজন ছাত্রকে দু'টো পৃথক ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে ১০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে সহকারী প্রক্টরকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগে। বাকি দুইজনকে বহিষ্কারের কারণ বলা হয়েছে ,তারা ধর্ম অবমাননা ও ইসলামের নবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাত নয়টায় বিবিসি বাংলাকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
"গত পাঁচই ফ্রেব্রুয়ারি একজন ছাত্রী একজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছিলো। এটি ছিল তার একটি গুরুতর অপরাধ এবং সেই অপরাধের কারণে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবং, তার সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য সুপারিশ এসেছে," বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।।
তিনি আরও জানান, "ওই দিনের ঘটনায় ওই দলেরই আরও নয়জনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা শিক্ষকের গায়ে হাত দেয়নি। কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে তাদের ভূমিকা ছিল।"
"তারা মাইকিং করেছে যে এই হয়েছে সেই হয়েছে। কিন্তু তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওদেরকে কেউ কোনও আক্রমণ করেনি। কিন্তু তারা ফেব্রিকেটেড তথ্য প্রচার করেছে। সবচেয়ে বড় কথা, ওরা সোজা চলে গিয়েছিল ভিসির বাংলোয়। গিয়ে দরজায় আঘাত করা, ক্ষয়ক্ষতির চেষ্টা, এসব করেছিলো," জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার।
তিনি বলেন, "গত তিন চারদিন আগে একজন ছেলে ও একজন মেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসলামের নবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছিলো। মেয়েটা ক্ষমা চেয়েছে, কিন্তু ছেলেটা তদন্ত কমিটির সামনে আসেনি। এদিকে এ বিষয়টি সাধারণ শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বিক্ষোভ করছিলো।"
তারই ধারাবাহিকতায় আরেকটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। সেখানে ছেলেকে দুই বছরের জন্য, মেয়েকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে," বলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাংবাদিক মারজান আক্তার। জানান, তার কাছে ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন যে, গত পাঁচই ফেব্রুয়ারি রাতে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারের বাড়ি ভাঙার যে ঘটনা ঘটে, সেই রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ইনকিলাব মঞ্চ' নামক শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠনের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের সামনে থাকা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ও শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত নামফলক ভাঙতে এসেছিলো। সেদিন তারা নারী শিক্ষার্থীদের হলে বাইরে থেকে তালা মেরে দেয়।
মারজানা আক্তার জানান, হলের ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, বাহির থেকে তালা আটকে দিয়ে হলের সামনে ভাঙচুর করেন প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী। এঘটনায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পেছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে এলে ওই ছাত্ররা শহীদ মিনারের দিকে চলে যান। এ সময় দুই পক্ষের ছোট পাথর ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে।
সেই ঘটনার পরে তদন্ত কমিটি হয়েছিলো। সে তদন্তের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।