রাবির নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ অনুষ্ঠিত
রাবিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ আজ সোমবার সকাল ১০টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব নবাগত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিক দত্ত, সাহিনুল আক্তার, শেখ আরাফ নিহাল, মো. নাহিদ রানা ও মনিষা চাকমাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের বরণ করে নেন। উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মোহা. ফরিদ উদ্দীন খানের সভাপতিত্বে এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মতিয়ার রহমান।
অনুষ্ঠানে নবীনবরণ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য-সচিব ছাত্র-উপদেষ্টা ড. মো. আমিরুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তৃতা দেন। সেখানে অন্যদের মধ্যে প্রক্টর প্রফেসর মো. মাহবুবর রহমান ও যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির সভাপতি প্রফেসর দিল আরা হোসেনও বক্তব্য রাখেন। নবীন শিক্ষার্থীদের পক্ষে আইন বিভাগের সাদিয়া শারমিন রিও ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. রোহান রহমান তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এছাড়া সিনিয়র শিক্ষার্থী মো. আবু তৈয়াব (আরবী বিভাগ) ও তৌসিফ ইমরোজ খালেদী (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ) নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য নবাগত শিক্ষার্থীদের রাবিতে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শিক্ষা জ্ঞান অর্জন ও জীবন গঠনের একটি প্রক্রিয়া। উচ্চশিক্ষা জীবনের ভবিষ্যত গড়ার এক বিশেষ ধাপ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে যে শিক্ষার্থীরা রাবিতে ভর্তি হয়েছে, তারা সেরাদের মধ্যে সেরা বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই শিক্ষার্থীরা ইয়ং স্কলার। মেধার বিবেচনায় তারা আমাদের উজ্জ্বল নক্ষত্র।
নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য আরো বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আজ দেশের অন্যতম শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার আদর্শ পরিবেশ বিদ্যমান আছে। আমাদের আছে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার, আধুনিক গবেষণাগার, উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনীয় সব সুযোগ সুবিধা। সেখান থেকে যা কিছু ইতিবাচক শিক্ষার্থীদের তা গ্রহণ করতে হবে। সেখান থেকে নির্যাসটুকু শিক্ষার্থীদের আহরণ করতে হবে। আহরিত জ্ঞানকে দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত করার মধ্যেই বিদ্যা অর্জনের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিহিত। কিছু নিলে কিছু দিতেও হবে। যে জ্ঞান অর্জন করা হলো তা দিয়ে দেশ-জাতি-সমাজকে সমৃদ্ধ করতে হবে। তবেই জ্ঞানার্জন অর্থবহ হবে।
প্রসঙ্গক্রমে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বৃত্তি। কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই বৃত্তির পরিমাণ দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে। এছাড়াও উৎসাহ ও প্রণোদনামূলক আরও কিছু পদক্ষেপের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৫৯টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউটে স্নাতক পর্যায়ের পাঠদান করা হয়। এখানে সকল বিষয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। যার প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে পারে তারা জ্ঞানের অন্যসব ধারাকেও সমানভাবে সম্মান করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, রাবিতে শীঘ্রই বিশ্বখ্যাত কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট হতে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্রমে বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আগামী কয়েক বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী; সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিশ্চয়ই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
উপাচার্য নবীন শিক্ষার্থীদের সার্বিক সাফল্য কামনা করে দেশের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের লক্ষ্যে কাজ করার তাদের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে এসএম রেদুয়ান জুনায়েদ, স্বর্ণ চক্রবর্তী, সিঁথি স্কলাস্টিকা ও পাই অং প্রু মারমা যথাক্রমে পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে অনুবাদসহ পাঠ করেন।
শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার টিএসসিসি’র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রফেসর মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অনুষদ অধিকর্তা, হল প্রাধ্যক্ষ, বিভাগীয় সভাপতি, বিশিষ্ট শিক্ষক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নবীনবরণ শেষ হয়।