সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু: ডোমারে জনতা ক্লিনিক সিলগালা, গ্রেফতার ৩

Jun 15, 2025 - 20:27
সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু: ডোমারে জনতা ক্লিনিক সিলগালা, গ্রেফতার ৩

ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

নীলফামারীর ডোমারে সিজারের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বেবী আক্তার (২৮) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকের অবহেলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে নবজাতক সন্তান সুস্থ রয়েছে। ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসন জনতা ক্লিনিকটি সিলগালা করেছে এবং তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শায়লা সাঈদ তন্বী ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিক তদন্তে চিকিৎসায় গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ায় ক্লিনিকটি তাৎক্ষণিকভাবে সিলগালা করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—ডা. নাজমুস সাকিব, সেবিকা সুমনা আক্তার ও সাবিয়া আক্তার।

নিহত বেবী আক্তার নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বড়গাছা দরগার পাড়া এলাকার নূর আলমের স্ত্রী। তিনি শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে প্রসব বেদনায় জনতা ক্লিনিকে ভর্তি হন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রিজওয়ানা ইয়াসমিন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, ‘পেটে পানি নেই’, তাই সিজার প্রয়োজন।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে ডা. রিজওয়ানা ইয়াসমিন, ডা. নিহার রঞ্জন ও ওটি সহকারী বিপুল সরকারের উপস্থিতিতে সিজার করা হয় এবং একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু অপারেশনের পর রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি। চিকিৎসকেরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকে। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রবিবার ভোরে চিকিৎসক বেবী আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা ক্লিনিক ঘেরাও করে চিকিৎসকদের বিচারের দাবি জানান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ও পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী বলেন, “ঘটনার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক তদন্ত করি। প্রাথমিকভাবে গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শায়লা সাঈদ তন্বী বলেন, “চিকিৎসায় অবহেলার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম জানান, নিহত নারীর স্বামী নূর আলমের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় আরও তিনজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।